কলকাতা: আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির (Nawsad Siddique) গ্রেফতারি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তুলকালাম। নওশাদের অ্যাকাউন্ট থেকে মিলেছে কোটি কোটি টাকা! এই আবহে মুখ খুললেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জানালেন, ” নওশাদ সিদ্দিকী নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে নানা আলোচনা হচ্ছে। ধর্মগুরুর চাদর পরে রাজনীতিবিদ, সেটা হয় না৷ যে দল গুজরাতে দাঙ্গা করেছে, সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ করেছে, টাকার জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখব আর ইন্সট্রুমেন্ট হয়ে কাজ করব তৃণমূলের ভোট কাটতে, সেটা হবে না। নওশাদের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা কে দিল? কোথা থেকে দিল? ২১-এর ভোটের অভিপ্রায় কী ছিল? আমরা তো জানতাম সিপিআইএম-এর সঙ্গে যোগ ছিল। বিজেপির সঙ্গে যোগ হল কীভাবে? নির্বাচন কমিশনের অফিসার নিয়ে বলতে হবে, সেটা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে বেরিয়েছে। তিনি আমাদের ধর্মগুরু হলে, যাঁরা মানুষ মেরেছেন, তাদের সঙ্গে কীভাবে যোগ হল?
শুভেন্দু অধিকারী সাহেব এখন বলছেন নওশাদ সিদ্দিকি ভালো মানুষ৷ আর এই মানুষটা বলেছিল ৩০% মানুষের ভোট নেব না। ৭০% মানুষের ভোট নেব। অর্থাৎ সিপিআইএম-কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি এদের যোগ ছিল বিজেপির সঙ্গে৷ আমরাও রাজনীতি করেছি৷ বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আন্ডারগ্রাউন্ডে অ্যাডজাস্টমেন্ট করিনি।”
ফিরহাদ প্রশ্ন তোলেন,” তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধীতার নামে এসব কী হচ্ছে? আগে বলতাম মিম ছিল বিজেপির বি-টিম। এখন বলছি নওশাদ সাহেব বিজেপির বি-টিম। ধর্মগুরুর সন্তান হয়ে বিশ্বাস ভেঙে দিলেন। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত দুঃখের।
আপনার ক্ষমতা আছে পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের হারিয়ে দেওয়ার? আপনি শুভেন্দু অধিকারীকে সুবিধা করে দেবেন বলে যা খুশি করে যাবেন। আর সংখ্যালঘু মানুষ মেনে নেবে, এটা হবে না।
শুভেন্দু অধিকারী এখন মুসলমানদের জাজ হয়ে গেছেন। তিনি নেতা হয়ে রাস্তায় নামতে বলছেন। উনি জেহাদী বলেছিলেন। উনি কি ভাবেন? আমরা বোকা, আমরা অবুঝ৷ দিল্লি ফিট করবে ওয়াইসিকে আর শুভেন্দুবাবুরা ঠিক করবেন নওশাদকে, এটা হবে না
। আমরা তথ্য জানতে চাই, নওশাদের টাকা এল কোথা থেকে? কার কার সঙ্গে চ্যাট হয়েছে, সেটা জানতে চাইছি। আবেগ নিয়ে খেলা করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।”
ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, ” ফুরফুরা সাহেবের সব পীরেদের সম্মান করি। তাঁদের নিবিড় ভাবে শ্রদ্ধা জানাই৷ যারা ধর্মগুরু তারা নিজস্ব স্থানে আছেন। কিন্তু রাজনীতির নামে বড় অন্যায় করেছেন।” বিজেপি-র বিরুদ্ধে তাঁর তোপ, ” তুমি ষড়যন্ত্র করে একটা ভাঙ্গর পেয়েছো। আর আমি ২১৭ আসন পেয়েছি। তুমি সফল হওনি সেটা ঠিক। কিন্তু তুমি ষড়যন্ত্র করেছো। তোমরা এক হয়ে লড়লেও পারবে না”
নওশাদ সিদ্দিকি গ্রেফতারি প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ” ভোটের সময় বলে আসেন ৩০% ভোট লাগবে না, ৭০% ভোট হলেই হবে। আমাদের একটাই কথা, ৩০% ভোট লাগবে না বলেছিলেন, আর এখন নিজের স্বার্থে সংখ্যালঘুদের বন্ধু সাজতে চাইছেন! সবার আগে এত কথা না বলে স্টেটমেন্ট করুন… এনআরসি ও সিএএ হবে না, হবে না, হবে না৷ এটা আমাদের দাবি৷ তার আগে মেকি দরদী সাজার দরকার নেই৷”