কলকাতা: বাজেটে কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড পেয়েছে ১০০০ কোটি টাকা৷ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ এই টাকা দিয়ে কি কাজ শেষ করা যাবে? এখন নানা মহলে সেটাই প্রশ্ন৷
সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ মেট্রো চলাচল করছে৷ হাওড়া ময়দান থেকে হাওড়া স্টেশন হয়ে মহাকরণ ছুঁয়ে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ প্রায় ৭০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাকি থাকা অংশের কাজ চলতি বছরেই শেষ করতে চায় রেল। তবে বৌবাজার যেভাবে গলার কাঁটা হয়ে বিঁধে আছে, তাতে সময়ে কাজ শেষ করার জন্য প্রতিদিন যেভাবে নানা পরিকল্পনা চলছে, তা সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আর হবে না ভোগান্তি! বড়সড় সুখবর মেট্রো যাত্রীদের
মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র অবশ্য জানিয়েছেন, “যা বরাদ্দ করা হয়েছে তা দিয়ে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করা যাবে বলে আমরা আশাবাদী।” তবে বউবাজার কাজ শেষ নিয়ে ঠিকাদার সংস্থার দায় যে থাকবে তা স্পষ্টত বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে রেলের পক্ষ থেকে।
২০২১-‘২২ অর্থবর্ষের বাজেটে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ ছিল ৯০০ কোটি টাকা। তার পরের বার, অর্থাৎ গত বাজেটে ২০২২-‘২৩ সালে মেট্রোর বরাদ্দ বেড়ে হল ১১০০ কোটি টাকা। হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত গোটা প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর। চলতি অর্থবর্ষে সেটি এসে দাঁড়িয়েছে ১০০০ কোটি টাকায়৷
প্রকল্প শেষের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে আরও এক বছর৷ গত মার্চ মাসের পর থেকে চলতি অর্থবর্ষে ওই মেট্রো প্রকল্পে পর পর দু’বার বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে কাজের গতি কার্যত থমকে গিয়েছে। মে মাসের পরে ফের অক্টোবরে বৌবাজারের সুড়ঙ্গে জল ঢুকে পড়ায় কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। তার পর থেকে একাধিক বিশেষজ্ঞ সংস্থার পরামর্শ নিয়েও একাধিক সমস্যার সমাধান ঝুলে রয়েছে।
আরও পড়ুন: গঙ্গার নীচে থমকে গেল মেট্রোর ট্রায়াল, কারণ শুনলে অবাক না হয়ে পারবেন না!
কিন্তু গত মে মাসের পরে ফের অক্টোবর মাসে বৌবাজার এলাকায় বিপর্যয়ের জেরে শিয়ালদহ থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত অংশের কাজ এখন কার্যত বিশ বাঁও জলে। মেট্রো রেল সূত্রের খবর, বেশ কয়েক বার কাজ শুরু করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু মাটির চরিত্র নিয়ে সংশয়ের কারণে ফের থমকে যেতে হয়েছে। এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহের মধ্যে মেট্রোরপশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের একাধিক কাজ বাকি। এ ছাড়া সুবোধ মল্লিক স্কয়্যারের এমারজেন্সি এভাকুয়েশন শ্যাফট নিয়েও সংশয় রয়েছে৷ বিকল্প স্থানের খোঁজ চলছে৷
এই অবস্থায় প্রাক্তন রেল আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা, বিলম্বের কারণে ৮৫৭৬ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের খরচ ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত ১০০০ কোটি টাকায় কাজ সমাপ্ত হবে তো।