Shaligram Stone Significance: শালিগ্রাম শিলা হল এক ধরনের ফসিল। হিন্দুধর্মে শালিগ্রাম শিলাকে স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে মনে করা হয়। নেপালের কালী গণ্ডকি নদীখাতে এই শালিগ্রাম শিলা পাওয়া যায়। নেপালের দামোদর কুণ্ড থেকে উত্পত্তি হয়েছে কালী গণ্ডকি নদীর। কালী গণ্ডকি নদীর খাতে পাওয়া যায় বলে শালিগ্রাম শিলাকে গণ্ডকি নন্দনও বলা হয়ে থাকে। হিন্দু ধর্মে কালো রঙের এই গোল পাথরকে বিষ্ণু জ্ঞান করে পুজো করা হয়।
শ্রীবিষ্ণুর আর এক নাম শালিগ্রাম
। এই পাথরকে শ্রীবিষ্ণুর রূপ বলে মনে করা হয় বলে এই পাথরকে শালিগ্রাম শিলা বলা হয়ে থাকে। বৃন্দাদেবীর অভিশাপ পেয়ে শালিগ্রাম নামে পরিচিত হন নারায়ণ। এই পাথরকে শালগ্রাম পাথরও বলা হয়ে থাকে। নেপালের কালী গণ্ডকি নদীর পাশে একটি গ্রাম আছে। এই গ্রামের নাম শালগ্রাম। এই গ্রামের নাম অনুসারেই এই পাথরকে শালগ্রাম শিলা বলা হয়ে থাকে।
হিন্দুধর্মে শিবলিঙ্গকে যেমন মহাদেবের রূপ বলে মনে করা হয়, তেমনই শালিগ্রাম শিলাকে নারায়ণের রূপ বলে মেনে করা হয়। তবে শিবলিঙ্গের পুজো যেমন বহুল প্রচলিত, শালিগ্রাম শিলার পুজো অতটা প্রচলিত নয়। আমাদের দেশে শিবলিঙ্গের পুজো হয় লক্ষ লক্ষ মন্দিরে, কিন্তু শালিগ্রামের পুজো হয় একটি মাত্র মন্দিরে।
97491069
হিন্দু ধর্মে প্রকৃতির পুজো করার রীতি আছে। প্রকৃতির নানা উপাদানকে এখানে ঈশ্বর জ্ঞানে পুজো করা হয়। শঙ্খকে যেমন ব্রহ্মারূপে পুজো করা হয়, তেমনই শিবলিঙ্গকে মহাদেবরূপে এবং শালিগ্রাম শিলাকে নারায়ণরূপে পুজো করা হয়ে থাকে। কালো ও খয়েরি ছাড়া সাদা, নীল ও সোনালী চ্ছটার শালিগ্রাম শিলাও পাওয়া যায়। তবে সোনালী শালিগ্রাম শিলা অত্যন্ত দুর্লভ। একটি সম্পূর্ণ শালিগ্রাম শিলায় নারায়ণের সুদর্শন চক্রের ছাপ পাওয়া যায়।
শালিগ্রাম শিলার নানা রূপ
মোট ৩৩ রকমের শালিগ্রাম শিলা পাওয়া যায়। তার মধ্যে ২৪ ধরনের শালিগ্রাম শিলা নারায়ণের ২৪টি রূপের প্রতিনিধিত্ব করে বলে মনে করা হয়। পঞ্জিকা অনুসারে প্রতি মাসে দুটি করে একাদশী থাকে। সেই হিসেবে এক বছরে ২৪টি একাদশী পালন করা হয়। এই ২৪টি একাদশী ২৪ ধরনের শালিগ্রাম শিলার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যদি শালিগ্রাম শিলা গোলাকার হয়, তাহলে তা বিষ্ণুর শিশু অবতার গোপালের রূপ বলে মনে করা হয়। আর যদি শালিগ্রাম শিলা মাছের মতো দেখতে হয়, তাহলে তা বিষ্ণুর মত্স্য অবতারের রূপ বলে মনে করা হয়। আর কচ্ছপের আকারের শালিগ্রাম শিলাকে বিষ্ণুর কূর্ম অবতারের রূপ বলে মনে করা হয়।
97027764
শালিগ্রাম শিলার একমাত্র মন্দির
নেপালের মুক্তিনাথে রয়েছে শালিগ্রাম শিলার একমাত্র মন্দির। বৈষ্ণব ধর্মের অন্যতম প্রধান এই মন্দির। মুক্তিনাথের পথে যাত্রা অত্যন্ত কঠিন। অত্যন্ত দুর্গম এই এলাকা। মুক্তিনাথের শালিগ্রাম শিলার মন্দিরে পুজো দিলে সব দুঃখ-কষ্ট দূর হয়ে যায় বলে প্রচলিত বিশ্বাস। মুক্তিনাথ যেতে হলে প্রথমে নেপালের কাঠমাণ্ডু যেতে হবে। সেখান থেকে বিমানপথে বা সড়কপথ পোখরা যেতে হবে, আর পোখরা থেকে জমসম। মুক্তিনাথ থেকে জমসম যেতে হেলিকপ্টার ভাড়া করা যেতে পারে।