ওটস-সিরিয়াল নয়, করিনার পুষ্টিবিদের পরামর্শে ব্রেকফাস্টে খান এই দেশি খাবার, রাতবিরেতে ডাক্তারের কাছে ছুটতে হবে না!

Dahi Chirwa Benefits: ব্রেকফাস্ট বললে প্রথমেই যে নামটি আসে তা হল টোস্ট, ওমলেট, স্যান্ডুইচ, সসেজ, প্যানকেক, ওটস্, সিরিয়াল-সহ নানা বিদেশি খাবার। তবে জানেন তো আমাদের বাংলার অতি প্রাচীন জলখাবার ছিল চিঁড়ে-দই।

আসলে ইংরেজি ব্রেকফাস্ট ভারতীয়দের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। হাতে সময় নেই, গরম দুধ বা দইয়ের সঙ্গে ওটস্ দিয়ে চিনি বা ফল মিশিয়ে খেয়ে নিন। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের ব্রেকফাস্টে রাখেন ওমলেট, ভেজ স্যান্ডুইচ, ডিমসিদ্ধ বা ওটস্। আর যাঁরা শরীর নিয়ে তেমন মাথা ঘামান না তাঁরা তো কচুরি, লুচি, পরোটা দিয়ে দিব্য মুখে চালান করেন। অস্বাস্থ্যের কথা না হয় নাই তুললাম। তবে ব্রেকফাস্টে দেশীয় স্বাস্থ্যকর খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন।

বাংলার অতি প্রাচীন একটি জলখাবার ছিল ফলার। যাকে পাতি ভাষায় বলা হয়

দই

– চিঁড়ে। এর সঙ্গে মণ্ডা, ক্ষীর, পাকা আম, কাঁঠাল, কলা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হয় ফলার৷ মধ্যযুগে বৈষ্ণবদের উৎসব-অনুষ্ঠানে চিঁড়ে-দই খাওয়া এবং খাওয়ানোর রীতি ছিল৷ তবে চিঁড়ে-দই যে কেবল বৈষ্ণবদের মধ্যে প্রচলিত ছিল তেমনটা কিন্তু নয়। মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গল কাব্যেও এর উল্লেখ রয়েছে। হঠাৎ আধুনিক হওয়া জীবনে দই-চিঁড়ের চল এখন আর নেই। অথচ এর স্বাদ যারা পেয়েছেন তাঁরা এই ভারতীয় ফুডটি কতটা সুস্বাদু। করিনা কাপুরের

পুষ্টিবিদ রুজুতা

দিয়েওকরও সকালের জল খাবারে এই খাবারটি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

সেলেব্রিটি পুষ্টিবিদ এবং লেখক, রুজুতা সব সময় প্রাকৃতিক তিনি দেশীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাঁর মতে, সম্পূর্ণরূপে অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এই খাবারটি। তাই সুস্থ থাকতে এই খাবার কেন খাবেন জেনে নিন।

Istock

দই-চিঁড়ে কী ভাবে অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করে?

যদিও এটা প্রমাণিত হয়নি যে স্ট্রেসের কারণে অ্যাসিডিটি হয়। তবে, একটা বিষয় স্পষ্ট যে স্ট্রেস আমাদের শরীরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এর ফলে পাকস্থলীর চারপাশে একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর যা অ্যাসিড উত্পাদন নিয়ন্ত্রণ করে, যা খাদ্যনালী পর্যন্ত যেতে বাধা পায়। আপনার অ্যাসিডিটির পেছনের কারণ আপনার অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বেশি রাতে ডিনার বা মানসিক চাপ। তবে যাই হোক না কেন এর ফল বেদনাদায়ক। তাই সকালের জল খাবারে এই খাবারটি রাখলে হজম হয়ে যায় দ্রুত।

পুষ্টিবিদ কী বলেছেন?

সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ এবং লেখক রুজুতা দিওয়েকর রোজ সকাল ১১ টার মধ্যে এই খাবারটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, চিঁড়ে নিয়ে অনেক মিথ রয়েছে। যেই গুজব উড়িয়ে দিয়ে সকালের জলখাবারে এই খবারটি রাখতে বলেন। আপনার যদি অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে তাহলে সুপারফুড হিসেবে খাদ্যতালিকায় এই খাবার রাখতে পারেন।

ব্রেকফাস্টে দই চিঁড়ে মানেই ম্যাজিক

কেবল বাঙালি নয়, যুগ যুগ ধরে দই-চিঁড়ে বিহারের অধিবাসীরাও খান। পুষ্টিবিদ এই খাবারটি উপকারিতার কথা জানাতে গিয়ে বলেছেন এটি একটি ভারতীয় স্বাস্থ্যকর জলখাবার। সকাল ১১টার মধ্যে খাওয়া উচিত বা বিকেল ৪-৬ টার মধ্যে এটি খাওয়া উচিত। সপ্তাহান্তে লেট নাইট সিনেমা দেখার সময় চিপস বা কোল্ডড্রিংক না খেয়ে এই খাবারটি খেতে পারেন। উপোস শেষেও এই খাবারটি রাখতে পারেন।

কেমন করে দই-চিঁড়ে তৈরি করবেন?

চিঁড়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। মাটি বা ধুলো যেন মিশে না থাকে। এতে মেশান ঘরে পাতা টকদই, তবে মিষ্টি স্বাদের জন্য গুড়ও দিতে পারেন। এর সঙ্গে কলা ছোটো ছোটো টুকরো করে দিতে পারেন। ইচ্ছে হলে গুলকন্দ, আমন্ড বা কিশমিশও দিতে পারেন। ঘড়ি ধরে দেখুন এটি তৈরি করতে পাঁচ মিনিটও লাগবে না।

Meat Side Effects: মাংস ছাড়া খাবার মুখে রচে না? নিজের অজান্তেই কিন্তু হাড়ের ক্ষতি করছেন, জেনে নিন বিশদে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *