স্তালিনগ্রাদের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের তুলনা

বৃহস্পতিবার ভলগোগ্রাদে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। আগে এই শহরের নাম ছিল স্তালিনগ্রাদ। ৮০ বছর আগে দ্বিতীয় যুদ্ধের সময় এই শহরই হিটলারের নাৎসি বাহিনীর অভিযান থামিয়ে দিয়েছিল। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পরাজিত হয়েছিল নাৎসি বাহিনী। সাম্প্রতিক ইউক্রেন যুদ্ধকে সেই স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন পুটিন। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, জয় আসন্ন।

পুটিন বলেছেন, একসময় জার্মান বাহিনীকে এই মাটিতেই আটকে দেওয়া হয়েছিল। রাশিয়াকে ফের জার্মান লিওপার্ড ট্যাঙ্কের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বস্তুত, অনেক টালবাহানার পর জার্মানি ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক লিওপার্ড ট্যাঙ্ক দিতে সম্মত হয়েছে। সেই ট্যাঙ্ক নিয়ে রাশিয়ার বাহিনীর মোকাবিলা করছে ইউক্রেন।

ঐতিহাসিকদের বক্তব্য, স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে রাশিয়ার বাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল অবলম্বন করেছিল। শীতের জন্য অপেক্ষা করেছিল তারা। সমস্ত ঘর জ্বালাতে জ্বালাতে তারা পিছিয়ে গেছিল। জার্মান বাহিনীও সেই সুযোগে রাশিয়ার ভিতরে ঢুকে পড়ে। এরপরেই শুরু হয় শীতকাল। জার্মান বাহিনীকে ঘিরে ধরে রাশিয়ার বাহিনী। ঠান্ডায় সামান্য মাথা গোঁজার জায়গাটুকুও পায়নি জার্মানির সেনা। ঠান্ডাতেই মৃত্যু হয়েছিল বহু সেনার। এর আগে এই একই কৌশল নেপোলিয়ানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল রাশিয়া।

বস্তুত, ইউক্রেনেরবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে আক্রমণ চালিয়ে এবারও সেই একই কৌশল নেওয়ার চেষ্টা করেছিল রাশিয়া। ঠান্ডায় মেরে ফেলতে চেয়েছিল ইউক্রেনের সেনা এবং সাধারণ মানুষকে। কিন্তু বাস্তবে তা সফল হয়নি। পুটিন অবশ্য এদিন বলেছেন, জয় আসন্ন। এদিন স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে ব্যবহৃত ট্যাঙ্ক নিয়ে একটি কুচকাওয়াজেরও আয়োজন করা হয়। সঙ্গে সেনা বাহিনীর প্যারেড। যুদ্ধবিমান উড়েছে আকাশে। যে কম্যান্ডারের নেতৃত্বে স্তালিনগ্রাদে রাশিয়া জয় পেয়েছিল, তার স্মরণে এক মিনিট নীরাবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠআনটি দেখতে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বক্তব্য অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে ইউক্রেন। তাদের বক্তব্য, আক্রমণ রাশিয়া চালিয়েছে, ইউক্রেন নয়। এবং রাশিয়ার এই যুদ্ধ জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই। বৃহস্পতিবারও রাশিয়ার মিসাইল ইউক্রেনের একটি নাগরিক হাউসিংকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনের বক্তব্য, প্রতিদিনই এভাবে বেসামরিক মানুষের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে রাশিয়া।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *