কলকাতার শ্রেয়াংশের অনন্য প্রতিভা, চার বছরেই অসম্ভবকে সম্ভব করে ঝুলিতে বিশ্বরেকর্ড

কলকাতার শ্রেয়াংশের তাক লাগানো প্রতিভা। চার বছরেই অসম্ভবকে সম্ভব খুদের। এই বসয়েই ঝুলিতে এসেছে জোড়া খ্যাতি! স্কুলে যাওয়ার বয়স হয়নি এখনও তার আগেই ২ বার ‘ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস, ভারত ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস সহ জাতীয় স্তরের একাধিক শিরোপা নিজের দখলে আনল বছর চারেকের শ্রেয়াংশ সাহা। একাধিক প্রতিযোগিতায় জিতে নিয়েছে সেরার সেরা মুকুট, জেলাকে পিছনে ফেলে খাস কলকাতার শ্রেয়াংশের এমন প্রতিভা তাক লাগাতে বাধ্য।

মাত্র চার বছর বয়সেই রাজ্য, থেকে দেশ, রাজধানী থেকে বিভিন্ন দেশের জাতীয় সংগীত সবই একেবারে ঠোঁটের ডগায়। মা পৌলমী বলেন, ‘ওর নিজের শেখার আগ্রহ, অজানাকে জানার অদম্য খিদেই সাফল্যের চাবিকাঠি’। ভবিষ্যতে IAS হওয়ার বড় সাধ ছোট শ্রেয়াংশর।

২০২২ সালের অগাস্টেই শ্রেয়াংশ নাম তুলেছে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে। ২০২৩ সালের জুনে ফের ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে উঠে আসে ছোট শ্রেয়াংশের নাম। এর পর গত বছর নভেম্বরে ভারত ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তোলে ছোট শ্রেয়াংশ। শ্রেয়াংশের শুভজিৎ সাহা পেশায় ব্যবসায়ী, মা পৌলমী গৃহবধূ। G-20 তালিভুক্ত দেশ থেকে শুরু করে ভারতীয় সংবিধান সবই মাত্র এইটুকু বয়সেই রপ্ত করে ফেলেছে সে। কী করে এই বয়সেই এত কিছু শিখল ছোট শ্রেয়াংশ?

মা পৌলমী বলেন, “ওর যখন দেড় বছর তখন ছোট ছোট জিনিস মনে রাখত, কোন সবজি, ফল দেখলে নিমেষেই সেই সকল আইটেমের নাম ও মনে রাখতে পারত। নতুন শব্দ ওকে বরাবরই আকর্ষণ করত। তারপর আস্তে আস্তে ও যখন ২ বছরে পা দেয় নতুন কিছু শেখানোর চেষ্টা করাতেই ও সহজেই তা রপ্ত করে ফেলে। প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী সকলেরই নাম শ্রেয়াংশ অনায়াসেই মনে রাখতে পারত। ৩ বছর ২ মাসে ওর নাম ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে রেজিস্টার করাই, ৩ বছর ৫ মাসেই ও ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নিজের নাম তোলে। দ্বিতীয় রেকর্ড করে ৩ বছর ১১ মাসে। দ্বিতীয় বারের জন্য ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম রেজিস্টার করাতে রীতিমত উচ্ছ্বসিত আমরা”।

একাধিক মেডিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টের নাম মনে রেখেই দ্বিতীয়বার বাজিমাৎ করে শ্রেয়াংশ। মায়ের কোলে বসে আধো গলাতেই নিজের খুশি তুলে ধরল ছোট শ্রেয়াংশ। বড় হয়ে IAS হওয়ার ইচ্ছার কথাও জানাল এই বিষ্ময় বালক। মাত্র চার বছর বয়সেই শ্রেয়াংশের এই প্রতিভাকে স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসও। মা পৌলমী আও বলেন, ‘মোবাইল বাচ্চাদের যে ক্ষতি করে এমন ধারণা রয়েছে অনেকেরই তবে মোবাইলের যে ভাল দিক রয়েছে সেটাও আমাদের ফোকাস করা উচিৎ। আমার ছেলে অতিমারী পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট দেখে রপ্ত করে ফেলে। সব বাচ্চাদের মধ্যেই একটা প্রতিভা থাকে আমাদের মা-বাবাদের উচিৎ সেই দিকে নজর দেওয়া। ওদের সময় দেওয়া। একেবারে বন্ধুর ম ওদের সঙ্গে মেশা’। নেতাজীনগরের এই ‘বিস্ময় বালক’কে ঘিরে এখন রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে।

ছেলের কৃতিত্ব আনন্দে আত্মহারা পৌলমীদেবী। তিনি আরও বলেন, ‘এখনকার অনেক মা-বাবাই তাঁদের সন্তানদের ওপর অনেক কিছুই চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, অনেক ক্ষেত্রে যা বাচ্চাদের স্বাভাবিক প্রতিভা ও বিকাশকে নানাভাবে ব্যাহত করতে পারে।বাচ্চাদের তাদের মত করে বড় হতে দিন, ওদের ইচ্ছা আগ্রহের দিকে বাড়তি নজর রাখুন, কারণ প্রতিটি বাচ্চা’ই কিছু কিছু প্রতিভা নিয়েই জন্মায় বাবা-মায়ের কাজ সেই প্রতিভা যাতে বিকশিত হয় সেই দিকটা নিশ্চিত করা।” তিনি বলেন, “আমি চাই, আমার মেয়ে বড় হয়ে ওর নিজের পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করুন, স্বাভাবিক ছন্দেই বেড়ে উঠুক ও! শ্রেয়াংশ যেন মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠতে পারে এটা ঈশ্বরের কাছে আমার প্রার্থনা’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *