ভাঙরে অশান্তির ঘটনায় গ্রেফতারি বেড়ে ৫৭, ‘চক্রান্ত চলছে’ বলে প্রতিবাদ নওশাদের

কলকাতা:  বারুইপুর আদালতে ঢোকার সময় ক্ষোভ উগরে দিলেন নওশাদ সিদ্দিকি। বললেন, ‘‘চক্রান্ত চলছে। রাজনৈতিক হিংসার শিকার আমি। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য হচ্ছে চক্রান্ত।” এদিকে ইতিমধ্যে আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকির জেল হেফাজত থেকে ফের পুলিশি হেফাজত হয়েছে! ধর্মতলার ঘটনায় আগে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা মোট ৫১ জনকে গ্রেফতার করে৷ এর পর আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়৷ নিউ মার্কেট ও হেয়ার স্ট্রিট থানা ধর্মতলার ঝামেলায় মোয় ২২ জনকে গ্রেফতার করে৷

এর পর সোমবার সকালে খবর এসেছে, ভাঙরে হাতিশালায় অশান্তির ঘটনায় গ্রেফতার আরও এক। ধৃতের নাম জহিরুল মোল্লা। কাশিপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের লেদার কমপ্লেক্স থানা। ঘটনার দিন একাধিক অশান্তিতে সে জড়িয়ে ছিল বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরা ফুটেজেও তা স্পষ্ট,  ধৃত তৃণমূলের সদস্য বলে জানা গিয়েছে৷

আরও পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান…! মমতাকে সোমবার ডিলিট সম্মান দেবে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন- সুমন কাঞ্জিলালের দলত্যাগ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বড় ধাক্কা! আক্ষেপের সুর পদ্ম শিবিরে

ও দিকে, নওশাদকে  আগামী ৯ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বারুইপুর আদালত। নওশাদ সিদ্দিকি ও আসমা খাতুনকে শুক্রবার বারুইপুর আদালতে নিয়ে আসা হয় হাতিশালা গন্ডগোলের ঘটনায় কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার মামলায়। নওশাদ সিদ্দিকির পক্ষ থেকে অভিযুক্তর আইনজীবীর  আবেদন, জামিন দেওয়া হোক। শুধুমাত্র বাকি অভিযুক্তদের  গ্রেফতারের জন্য তাঁকে ফের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হয়েছে সরকারি আইনজীবীর তরফে, এমনই অভিযোগ তোলা হয়৷ বলা হয়, নওশাদ একজন বিধায়ক। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই তো বাকিদের ধরা যাবে।

নওশাদের পক্ষে সওয়াল করে বলা হয়,  এটা ‘লেম এক্সকিউজ’। তদন্তকারী অফিসার সিজ করেছিল সিসি ক্যামেরা। সিসি ক্যামেরা দেখে অভিযুক্তদের ধরলে তাহলে আবার ওঁকে পুলিশ হেফাজত ফের চাওয়ার মানে কী? যাঁদেরকে গ্রেফতার করা হল, তাঁদেরকে নাকি সিসি ক্যামেরা দেখে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাহলে কো-অ্যাকিউজডদের গ্রেফতারের জন্য আটকে রাখার কী মানে? ওই দিন ধর্মতলায় নওশাদ ছিলেন, তা হলে সেসময় ভাঙরে একই সময় কী করে উপস্থিত থাকতে পারেন তিনি? একই ব্যক্তি দু-জায়গায় এক সময়ে কী করে উপস্থিত থাকতে পারেন?

সওয়ালে আরও বলা হয়,  এক জন বিধায়ককে গ্রেফতার কিসের ভিত্তিতে? স্পিকারকে তো জানানো হয়নি৷ এই যুক্তিতেই জামিনের জন্য আবেদন করা হয়। পাশাপাশি অন্য একটি অভিযোগ নিয়ে বলা হয়, জুলফিকর মোল্লা অভিযোগ করেন, তারপর তিনি ডিসচার্জও হন।  সেরকম কোনও ক্ষত তাঁর শরীরে নেই। তা হলে হেয়ার স্ট্রিট মামলায় ১৪ দিন পুলিশ হেফাজত হওয়ার পর কেন  কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার মামলায় পুলিশ হেফাজত চাওয়া হচ্ছে?

সরকারি আইনজীবীর পাল্টা পাল্টা জবাব, নওশাদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে ঘটনার সঙ্গে। অন্য অভিযুক্তদের ধরার জন্য পুলিশ হেফাজতের প্রয়োজন। সিডিতে ভিডিও ও ফটো রয়েছে, কোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। ঘরে ঢুকে আগুন জ্বালিয়ে দিলে সেটা ৪৩৬-এর  মধ্যে পরে। এ দিন দু’পক্ষের আইনজীবী সওয়াল জবাবে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে কোর্ট। বিচারক নওশাদকে প্রশ্ন করেন,  আপনি সুস্থ আছেন? নওশাদ  জবাব দেন, জি স্যার। রাতে মেডিসিন চলছে। দাঁতের মেডিসিন চলছে। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারক নওশাদ ও আসমা খাতুনকে ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *