নম্বরে প্রচুর অসঙ্গতি! এসএসসির টেট কাণ্ডে এবার নয়া মোড়

কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির হাতে। আর এবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের তদন্তেও উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল পেশ করার আগে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য ফের নিয়োগ নিয়ে জটিলতা বাড়ালো বলেই মনে করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের জেরে স্কুল সার্ভিস কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের প্যানেল পেশ করার আগে এসএসসি তরফে নেওয়া টেটের ওএমআর শিট যাচাই করা হবে। এখনও পর্যন্ত এসএসসির তরফে দুটি টেট নেওয়া হয়েছে। ২০১১-১২ এবং ২০১৫ সাল এই দুবার টেট নেওয়া হয়েছে এসএসসির তরফে। আর সেই যাচাই পর্বতেই একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।

কমিশন সূত্রে খবর, ২০১৫ তে নেওয়া এসএসসির টেটে ওএমআর শিটে নম্বর নিয়ে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ইতিমধ্যেই যেসব চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে, সেই চাকরিপ্রার্থীদের মধ্য থেকেই একাধিক চাকরিপ্রার্থীর ওএমআর শিটের নম্বরেই ধরা পড়েছে এই অসঙ্গতি। প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব চাকরি-প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া শেষ হয়েছে সেই সব চাকরি প্রার্থীদেরই টেটের ওএমআর শিট যাচাই পর্ব শুরু করে কমিশন। সেই যাচাই পর্বের কাজ শেষ হওয়ার পরেই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে এসএসসির কাছে।

২০১৫ নেওয়া টেটের যাচাই পর্বের কাজ শেষ হলেও ২০১১ বারের টেটের যাচাই পর্বের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এসএসসি আধিকারিকদের দাবি উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের জন্য যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের মধ্য থেকে ২০১৫ টেট দেওয়া প্রার্থীরা যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন ২০১১-১২ তে দেওয়া টেট প্রার্থীরাও। তাই দুটি টেটের ওএমআর শিট যাচাই করা হচ্ছে এসএসসির তরফে।

আর এই যাচাই পর্বতে অসঙ্গতি উঠে আসায় উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ নিয়ে ফের জটিলতা তৈরি হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

কমিশন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ইন্টারভিউ নেওয়া চাকরি প্রার্থীদের মধ্য থেকে যেসব চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিটের নম্বরে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে গোটা তথ্যই হাইকোর্টে হলফনামা আকারে জমা দিতে চলেছে কমিশন। ফেব্রুয়ারি মাসে মাঝামাঝি হাইকোর্টে জমা দেবে কমিশন। যদিও ওএমআর শিটের নম্বরে অসঙ্গতি ধরা পড়া নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার।

তবে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি হাইকোর্টে হলফনামা যে দিতে চলেছে এদিন সে বিষয়ে এসএসসির অবস্থান স্পষ্ট করেন চেয়ারম্যান। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সিদ্ধান্ত মজুমদার বলেন, “আমাদের তরফে ওএমআর শিটের যাচাই পর্বের কাজ চলছিল বলেই উচ্চ প্রাথমিকেরপ্যানেল হাইকোর্টে পেশ করতে সময় লাগছিল। সেই যাচাই পর্বের ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে প্রায়। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি আমরা হাইকোর্টে হলফনামা আকারে জমা দেব। হলফনামাতেই আমরা যা জানানোর জানাব।”

আরও পড়ুন, মাত্র দেড় মিনিটেই শেষ ইন্টারভিউ! প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে আরও বড় দুর্নীতির গন্ধ

আরও পড়ুন, ৬ বছর পরেও জানা যায়নি TET-এর ফল! মানিককে ২ লক্ষ টাকার জরিমানার নির্দেশ বহাল

গত ৮ বছর ধরে চলছে এসএসসি উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া। ১৪ হাজারেরও বেশি শূন্য পদ রয়েছে এই নিয়োগের জন্য। তবে এসএসসির যাচাই পর্বতে ওএমআর শিটের নম্বরে অসঙ্গতি তথ্য উঠে আসায় এই নিয়োগে নতুন করে কোন জটিলতা তৈরি হবে না তো? এমনটাই এবার আশঙ্কা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের।

CategoriesUncategorized

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *