কলকাতার এই ছয় রোম্যান্টিক স্থানে প্রিয়জনকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে পারেন…

এবারের ভ্যালেন্টাইন্স ডেটা জম্পেশভাবে কাটাতে চাইলে প্রোপোজ ডে-টাকে এড়িয়ে গেলে হবে না। এই দিনই প্রিয়জনকে মনের কথা বলে ফেলুন। তবে চার দেওয়ালের মধ্যে নয়, মনের মানুষকে প্রেম নিবেদন করতে পারেন কলকাতার নানা জায়গায়।

প্রেমের ফাঁদ সারা ভুবন জুড়ে পাতা আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই ফাঁদে অনেকে পড়েননি। এদিকে টা টা বাই বাই করে শীত যখন বাড়ি ফিরতে চলেছে, আর বসন্ত এক পা দুই পা করে প্রবেশ করছে তখনই চারদিকে কেমন একটা প্রেম প্রেম ভাব। আবার আন্তর্জাতিক ঘোষিত প্রেম দিবসও দুয়ারে কড়া নাড়ছে। প্রথম দিন গোলাপ দিবসের পরের দিনই প্রেম নিবেদনের দিবস। মানে ‘বাংলায়’ যাকে বলে প্রোপোজ ডে। দিনটা প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল হল থিমের যুগ। দুর্গাপুজো, বিয়েবাড়ি, ককটেল পার্টি যাই হোক না কেন থিম মাস্ট। তাহলে প্রেমেরও থিম কেন হবে না? প্রেমের থিম মানে প্রেম নিবেদনের থিম। এই যেমন ধরুন প্রেমিকাকে প্রোপোজ করবেন। সাদামাটাভাবে পার্কে বা বাড়ির ছাদে না করে কলকাতার এই বিশেষ জায়গাগুলিতে যেতে পারেন।

প্রিন্সেপ ঘাট

প্রিন্সেপ ঘাট কলকাতার পুরনো দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি। সপ্তাহান্তে অনেক মানুষ এখানে বেড়াতে যান। হুগলি নদীর তীরের এই স্থানটি যুবক যুবতিদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। এখান থেকে অনেকে নদীতে নৌকায় প্রমোদভ্রমণে যান। প্রিন্সেপ ঘাট থেকে বাজে কদমতলা ঘাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পথে আলোকমালা, বাগান, প্রমোদপথ, ফোয়ারা দিয়ে সাজানো রয়েছে। সূর্যাস্তের সময় এখানকার সৌন্দর্য অপরূপ হয়ে ওঠে। সেই সময় সূর্যকে সাক্ষী রেখে প্রিয় মানুষকে মনের কথা বলুন। সারা জীবন সেই মুহূর্তটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। (All photo credit: wikimedia commons)

মিলেনিয়ম পার্ক

হুগলি নদীর গা ঘেঁষে, স্ট্র্যান্ড রোডের ধারে অবস্থিত মিলেনিয়ম পার্ক। সন্ধ্যার সময় এখানকার গঙ্গার বুকে সূর্যডোবার দৃশ্য আট থেকে আশি সকলকে মুগ্ধ করে। পার্কে বসে গঙ্গাবক্ষে সুয্যি মামার ডুবে যাওয়ার দৃশ্য দেখলে মনে হবে যেন পোস্ট কার্ডে আঁকা কোনও বিদেশের দৃশ্য। আর এই স্থানটিও প্রেমিক-প্রেমিকাদের দারুণ প্রিয় জায়গা। প্রেম নিবেদনের জন্যও এটি আদর্শ স্থান।

সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল

কলকাতার সেন্ট পল’স্ ক্যাথিড্রাল গির্জাটি গথিক স্থাপত্যের একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। চার্চের বাইরের চত্বর এবং ভিতরে গেলে মনে হবে যেন ইউরোপের কোনও চার্চে প্রবেশ করেছেন। চার্চের বাগানটিকে লোকে বলে ঈশ্বরের বাগান। আর এই ঈশ্বরের বাগানে প্রেমিকাকে প্রেম নিবেদন করতে পারলে কিন্তু কেল্লাফতে।

মার্বেল প্যালেস

উত্তর কলকাতার মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে অবস্থিত উনিশ শতকের একটি প্রাসাদোপম জমিদার বাড়ির চলতি নাম মার্বেল প্যালেস। আগাগোড়া শ্বেতপাথরের তৈরি এই ভবনটি ১৮৩৫ সালে নির্মাণ করেছিলেন ধনী বাঙালি বণিক রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক। বাড়ির একটা অংশে তাঁর বংশধরেরা বসবাস করেন। মার্বেল প্যালেস চত্বরের মধ্যে অবস্থিত চিড়িয়াখানাটি ভারতের প্রথম চিড়িয়াখানা। শহরের বিশৃঙ্খলতার মাঝেও এই মার্বেল প্রাসাদটি যেন অনন্য। এখানে গিয়ে প্রিয় মানুষকে প্রেম নিবেদন করে দেখুন। বেশ একটা রাজকীয় অনুভূতি হবে।

ইকো পার্ক

নিউ টাউনের ইকো পার্কটি দেশের বৃহত্তম বিনোদন পার্ক। প্রায় ৪৮০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই পার্কে একটি জলাশয় এবং মাঝখানে একটি দ্বীপ রয়েছে। পার্কটি তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত। একটি থিম বাগান, একটি বিনোদনের এলাকা এবং পরিবেশগত অঞ্চল। কলকাতার সেরা পর্যটন স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম এটি। এত সুন্দর সাজানো গোছানো এই পার্কে এক বার্ প্রবেশ করলে মনে হবে যেন বিদেশে এসে পড়েছেন। এই পার্কে গেলে বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্যের ছোটো প্রতিলিপি পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এই সপ্তমাশ্চর্যকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে প্রিয় মানুষকে প্রোপোজ করুন। অসাধারণ অনুভূতি হবে।

পিয়ালি দ্বীপ

ঠিক কলকাতায় নয়, তবে কলকাতার খুব কাছেই (৭২ কিলোমিটার) সুন্দরবনের পিয়ালি নদীর ধারে রয়েছে একটি সুন্দর মনোরম দ্বীপ। নাম পিয়ালি দ্বীপ। অপূর্ব সুন্দর এই দ্বীপটিতে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটাতে চাইলে প্ল্যান চেঞ্জ করবেন না। প্রকৃতির মাঝে, মনোরম পরিবেশে এমন সুন্দর জায়গা আর পাবেন না। সেখানেই মনের মনাুষকে প্রেম নিবেদন করে ফেলুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *