বাংলা সাহিত্যে নক্ষত্র পতন, প্রয়াত সুবিমল মিশ্র

প্রয়াত সাহিত্যিক সুবিমল মিশ্র। বুধবার ভোর ৫টা নাগাদ তিনি মারা যান। দীর্ঘ সময় ধরেই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্যে যুগের শেষ হল। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০। প্রতিষ্ঠান বিরোধীতার মহীরুহ ছিলেন সুবিমল মিশ্র। তার প্রয়াণ সার্বিকভাবে বাংলা সাহিত্যের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলেই মনে করছেন অনেকে।

নিজের লেখা গল্প, উপন্যাসকে অ্যান্টি-গল্প ও অ্যান্টি-উপন্যাস বলতেন সুবিমল মিশ্র। ১৯৬৭ সালে ‘হারাণ মাঝির বিধবা বউয়ের মড়া বা সোনার গান্ধী মূর্তি’ গল্পটি লিখে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। বাংলা সাহিত্যে তখন স্বর্ণযুগ। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে সুবিমল নিজের লেখাকে আলাদা করে চিনিয়ে দিতে পেরেছিলেন। 

তাঁর প্রয়াণের সংবাদে শোকস্তব্ধ বাংলার সাহিত্য জগৎ। দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে অসুস্থ ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানবিরোধী সাহিত্যক। শত অপ্রাপ্তির মধ্যেও পুরো জীবনে নিজের মতাদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি মিশ্র। তাঁর ৫০ বছরের সাহিত্যজীবনে কোনদিন কোন বাণিজ্যিক পত্রিকায় একটি অক্ষরও লেখেননি। সুবিমল মিশ্রের নিজের ও পাঠকদের ভাষায় তার লেখা ছোটগল্পগুলো অ্যান্টি-গল্প এবং উপন্যাসকে অ্যান্টি উপন্যাস বলা হয়।

 তার যে ছোটগল্পটি বাংলা সাহিত্যজগতে প্রথম আলোড়ন ফেলে সেটি হল ৬৭ সালে প্রকাশিত ‘হারান মাঝির বিধবা বৌ এর মড়া অথবা সোনার গান্ধীমূর্তি’। এই গল্পটি ইংরেজিতে অনূদিত হয়। তার প্রায় সমস্ত লেখাতেই রাজনৈতিক, সামাজিক অবক্ষয়ের প্রতি দ্বিধাহীন বিশ্লেষণ ও মধ্যবিত্ত সমাজের যৌনতা নিয়ে অচ্ছুতপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ লক্ষ্য করা যায়। রাষ্ট্র ব্যবস্থা, তার শোষণ, সুবিধাভোগী শ্রেণীর প্রতি ব্যঙ্গ, অবক্ষয়, দ্বন্দ্ব, লেখার কোলাজ এবং বিশেষভাবে নৈরাজ্য ইত্যাদি সুবিমলের লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

তাঁর প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে আছে তেজস্ক্রিয় আবর্জনা, আসলে এটি রামায়ণ চামারের গল্প হয়ে উঠতে পারতো, হাড়মটমটি, ক্যালাকাটা ডেটলাইন, ওয়ান পাইস ফাদার মাদার, চেটে চুষে চিবিয়ে গিলে।

আরও পড়ুন-‘মানসিক অত্যাচার চলছে,’ আদালতে বললেন পার্থ, পাল্টা কুণাল, ‘ সব নৌটঙ্কি’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *