দীর্ঘ বেশ কয়েক মাস গানে গানে সারেগামাপা-এর মঞ্চ মাতিয়ে তুলেছেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বেশ কিছু শিল্পী। কলকাতা ছাড়িয়ে গ্রাম-গ্রামান্তর সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বহু প্রতিভা প্রতি সিজনে আসেন এই মঞ্চে। একের পর এক এপিসোডে তাঁদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ফিনালেতে। এবারে প্রথম স্থানে দু’জন। অস্মিতা ও পদ্মপলাশ। একেবারে শুরুর দিন থেকেই নানা চমকে ভরে তুলেছিলেন তাঁরা। নানা ঘরানার গানে মাতিয়েছেন মঞ্চ। তবু চারিদিকে বহু বিতর্ক চলছে। কে উপযুক্ত, কার জায়গা পাওয়ার কথা এসব নিয়ে। অনুষ্ঠান শেষে মুখ খুললেন অস্মিতা কর।
97690508
নিউটাউনের মেয়ে অস্মিতা। শুরুর দিন থেকেই চোখে পড়ার মতো বেশকিছু পারফরমেন্স উপহার দিয়েছেন দর্শককে। এমন জয়ে কী বললেন অস্মিতা? “একটা শান্তির অনুভূতি হচ্ছে। দীর্ঘ আট মাস একসঙ্গে সকলে কাটিয়েছি। ভালো মুহূর্ত এসেছে এই সময়টায়। অনেকক্ষেত্রেই এমন হয় যে টানা পথ হেঁটে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এরপর একটা আনন্দের মুহূর্ত এসে সব ক্লান্তি দূর করে দেয়। রেজাল্টটা একটা বড় স্বস্তির জায়গা।” তবে এই সিজনে এমন একটা ফল যে হবে, তা সত্যিই ভাবেননি অস্মিতা। বললেন, “শুধুই নিজের বেস্টটা দিতে চেয়েছি। গানটা যাতে সবসময় গাইতে পারি। দর্শক থেকে বিচারক সকলেই ভরসা রেখেছেন তাঁর ওপর তাই কৃতজ্ঞ।”
97628239
যুগ্মভাবে প্রথম হওয়া প্রসঙ্গে অস্মিতার মত, “‘যুগ্ম’ শব্দটা যে খারাপ একেবারে লাগে না তা নয় (হাসি)। তবে একটা কথা বলতেই হবে এ বিষয়ে এই পুরস্কারটাই আমার কাছে ভীষণভাবে আকস্মিক। কখনও আশাই করিনি এ সম্মান আমার ঝুলিতে আসবে। আবার এটাও ঠিক যে সেরার সেরা হতেই হবে এটা ভেবেও অংশগ্রহণ করিনি।” প্রতিদিনই নিজেকে একটু একটু করে
আপডেট করার চেষ্টা
করেছেন অস্মিতা বলে তাঁর মত। পারফরমেন্স নিয়ে সবসময়ই চিন্তা ছিল তাঁর। চ্যাম্পিয়নের জায়গায় রানার আপ-এর তালিকায় নাম থাকলেও অবাক হতেন না অস্মিতা। ছোটবেলা থেকেই শাস্ত্রীয় সংগীতেই মূলত তাঁর তালিম। অডিশনে
শ্রেয়া ঘোষালের
‘মোহে রং দো লাল’ গেয়ে বিচারকের মন জয় করে নিয়েছিলেন অস্মিতা। এরপর গোটা জার্নি জুড়ে সব ধরণের গান গেয়েছেন তিনি। লোকসংগীত থেকে কীর্তন, আধুনিক সব গান গাইতে পারাটাও একটা অন্য সন্তুষ্টি অস্মিতার কাছে।
97662873
পরিবারের সকলেই গান-বাজনা ভালোবাসেন। তালিমের একটা অভ্যেস তাই ছোট থেকেই ছিল। গান তাঁর ভালোবাসার জায়গা। পড়াশোনা সবক্ষেত্রে প্রায়োরিটি হলেও, গানবাজনার ক্ষেত্রে তাঁর বাড়িতে কখনওই কোনও বাধা ছিল না। পেশা হিসেবে যেকোনও কিছুই বেছে নেওয়ার অধিকার তাঁর বরাবরই ছিল। রিয়্যালিটি শো সত্যিই এমন একটা জায়গা, যেখানে মানুষ খুব সহজেই আসে আবার সহজেই হারিয়েও যায়। আবার নিজের ট্যালেন্ট তুলে ধরার জন্য ভীষণভাবে প্রয়োজন একটা ভালো প্ল্যাটফর্মের। কিন্তু সত্যিই কি এই ধরনের শো-এ অংশগ্রহণ করে কোনও লাভ হয় প্রতিযোগীদের? অস্মিতার বক্তব্য, ‘নিজেদেরও তো কিছু দায়িত্ব থাকে, একটা প্রতিযোগিতার পর নিজেকে অনেকটা সময় দিতে হয়। আরও বেশি করে
। পুরস্কার আর আলোর রোশনাইয়ে ভেসে গেলে সত্যিই পরে সমস্যা হয়।’
চারিদিকে নানা বিতর্ক। কার জয়ে খুশি দর্শক, কাকে কোথায় দেখতে চেয়েছিলেন কে। তবে সবকিছুকে ফুৎকারে উড়িয়ে আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন অস্মিতা।