এই সময়:
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha) নামে যোধপুর পার্ক এলাকায় তাঁর বাড়ির কাছে এবং হাইকোর্টের আশপাশে পোস্টার সাঁটানোর ঘটনায় পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে অসন্তুষ্ট কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। বুধবার তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ লিখিত ভাবেই জানিয়েছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনারের রিপোর্টে অখুশি আদালত। আরও তদন্ত করে আদালতের সব প্রশ্নের জবাব আগামী শুনানির দিন রিপোর্ট আকারে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিপিকে। বিচারপতি টিএস শিবাগ্ননম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশের বেঞ্চ জানিয়েছে, আদালত অবমাননার ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা খুবই জরুরি। তাই যদি কোনও সংগঠন সেটা না পারে তখন আদালতই সেই কাজ করবে। যদিও তার আগে গোটা বিষয়টির সুষ্ঠু মীমাংসায় আইনজীবীদের সংগঠনগুলির উপরেই দায়িত্ব দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটের নামে সেখানে ৯ জানুয়ারি কয়েক জন আইনজীবীর বিচারে বাধাদানের ঘটনাতেও সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আইনজীবীদের পাঁচটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে দায়িত্ব দিয়েছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। কাদের চিহ্নিত করা হলো, তাদের নাম আগামী শুনানিতে হলফনামা দিয়ে সংগঠনগুলিকে জানাতে হবে। হাইকোর্টের আইনজীবীদের তিনটি সংগঠন ছাড়াও রাজ্য ও সর্বভারতীয় বার কাউন্সিলকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
97595525
যদিও আদালতের আবেদন, যাঁরা সে দিন ওই এজলাসের সামনে
বয়কটের
মতো ঘটনায় যুক্ত ছিলেন, আদালত চায়, তাঁরা নিজেরাই এগিয়ে এসে স্বীকার করুন। সে ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা সবারই কমবে। তার পরে আদালত বিবেচনা করবে তাঁদের ব্যাপারে। এ দিন খোলা এজলাসে পুলিশের দেওয়া সিসিটিভি ফুটেজ ল্যাপটপে চালিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ছবি দেখার পর এক সময়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অরুণাভ ঘোষ কিছুটা অনুযোগের সুরে বলেন, ‘এই ফুটেজে কাউকে বোঝা যাচ্ছে না। কাউকে কেউ বাধা দিচ্ছে, এমনটাও বোঝা যাচ্ছে না।’ তাতে কিছুটা বিরক্ত বিচারপতি শিবাগ্ননম তাঁকে বলেন, ‘তা হলে আপনি আপনার সংগঠনের তরফে সেটাই হলফনামা দিয়ে জানান। তার পরে কী ভাবে ওই ফুটেজ দেখে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে হয়, সেটা আদালত জানে। ভুলবেন না, কোর্ট ক্ষমতাহীন নয়।’ বিচারপতি দাশ মন্তব্য করেন, ‘এটা রাজনীতির মঞ্চ করবেন না।’
97643333
এ দিন পুলিশ কমিশনারের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, পোস্টার সাঁটানোর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত লেক ও হেয়ার স্ট্রিট থানা ৮৯ জনকে জেরা করেছে। শহরের সাত জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আড়াইশোর বেশি ছাপাখানাকে চিহ্নিত করে তাদের মধ্যে ৩৯টির থেকে নথিও সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই সব নথি ও পোস্টারের অংশ কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানোও হয়েছিল। কিন্তু এই সব পরীক্ষার পরিকাঠামো তাদের নেই বলে জানিয়েছে সিএফএসএল। পুলিশ জানিয়েছে, লেক থানা এলাকায়
কিছু লোককে মুখ ঢাকা অবস্থায় পোস্টার লাগাতে দেখা গিয়েছে। তাই তাদের চিহ্নিত করা যায়নি। তবে ছ’জনকে পুলিশ অন্য ভাবে চিহ্নিত করেছে। আদালত এ দিন সেই ছ’জনকে মামলায় যুক্ত করে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দেয়। বিস্তারিত রিপোর্ট পড়ার পর আদালত নির্দেশে জানায়, রিপোর্টে খুশি নয় কোর্ট। ফুটেজ চিহ্নিত করার ব্যাপারে জোর দেয় আদালত। ১৩ মার্চ হবে পরবর্তী শুনানি।